চট্টগ্রামে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে এক যুবককে পিটিয়ে মারার একটি ২০ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
গতকাল শনিবার ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন দুই নম্বর গেট আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের নিচে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে ‘মধু হই হই আঁরে বিষ খাওয়াইলা, কোন কারণে ভালোবাসার দাম ন দিলা’ গানটি গেয়ে যুবককে পেটানো হচ্ছে।
ঘটনাটি গত ১৪ আগস্টের হলেও জানাজানি হয় গতকাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যাকে মারধর করা হচ্ছে, ওই যুবকের নাম মো. শাহাদাত হোসেন (২৪)। চট্টগ্রাম নগরের আখতারুজ্জামান উড়ালসড়কের নিচে ২ নম্বর গেট মোড় এলাকায় তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে ১৪ আগস্ট রাতে নগরে প্রবর্তক এলাকা থেকে পুলিশ শাহাদাতের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পরদিন শাহাদাতের চাচা মো. হারুন বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেছেন। এতে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে সে বিষয়েও এজাহারে কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
এ বিষয়ে পুলিশ জানায়, ১৪ আগস্ট রাতে প্রবর্তক এলাকা থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার চাচা ফেসবুকে লাশের ছবি দেখে থানায় এসে মামলা করেন।
মো. শাহাদাত হোসেন নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি থানাধীন পাঁচবাড়িয়াইউনিয়নের নদনা গ্রামের মিয়া জান ভূঁইয়াবাড়ির মৃত মোহাম্মদ হারুনের ছেলে। থাকতেন নগরের কোতোয়ালি থানাধীন বিআরটিসি এলাকার বয়লার কলোনিতে। তিনি নগরের ফলমণ্ডির একটি দোকানে চাকরি করতেন।
এজাহারে নিহত শাহাদাতের চাচা মো. হারুন উল্লেখ করেন, ১৩ আগস্ট বেলা দুইটার দিকে কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন শাহাদাত। সন্ধ্যা সাতটার দিকে ফোন করলে কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় চলে আসবেন বলে তার স্ত্রীকে জানান শাহাদাত। গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী বাসায় ফিরে না আসায় খোঁজাখুঁজি করেন শারমিন। এ সময় শাহাদাতের মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
১৪ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেসবুকে বাদী দেখতে পান, নগরের প্রবর্তক মোড়ের অদূরে বদনা শাহ মিয়া (রহ.) মাজারের বিপরীতে সড়কের পাশে তার ভাতিজা শাহাদাত হোসেনের মৃতদেহ পড়ে আছে। পরে এদিন রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে শাহাদাতের লাশ শনাক্ত করে তার স্ত্রী শারমিন আক্তার ও বাদী।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর শাহাদাতের স্ত্রী মারধরের শিকার ব্যক্তি শাহাদাত বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে যারা মারধর করছে, তাদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। তাদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’