জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ শনিবার সকাল থেকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন আছেন। দলটির কার্যালয় ঘিরে রাজধানীর কাকরাইল এলাকায় সেনাবাহিনীর একাধিক দলকে টহল দিতে দেখা গেছে। তবে ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত কার্যালয়টিতে জাপার কোনো নেতা–কর্মীকে দেখা যায়নি।
কাকরাইলে দলের প্রধান কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পরও আজ শনিবার সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল জাপা। সেই সমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দেওয়া হয় ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র, শ্রমিক, জনতা’র ব্যানারে। এ পরিস্থিতিতে আজ কাকরাইলসহ আশপাশ এলাকায় সভা-সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা ও বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
পুলিশের নিষেধাজ্ঞার পর জাতীয় পার্টি তাদের আজকের সমাবেশ স্থগিত করেছে। তবে যেহেতু সমাবেশ ও পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা ছিল, সে কারণে ওই এলাকায় বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, কাকরাইলসহ আশপাশ এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন দল এই এলাকায় টহল দিচ্ছে। সেনাবাহিনীও এই এলাকায় টহলে রয়েছে। ফলে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই।
সরেজমিন দেখা গেছে, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। কার্যালয়ের উল্টো পাশে কয়েকজন পুলিশ সদস্য অবস্থান করছেন। কার্যালয়ের আশপাশেও পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। দুপুর ১২টার দিকে দুটি গাড়িতে করে সেনাসদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। তবে এই এলাকায় জাতীয় পার্টির কোনো নেতা-কর্মীকে দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন : কেন্দ্র চাইলেও স্থানীয় বিএনপি চায় না ভিপি নুরকে
জাপাকে ঘিরে উত্তেজনা শুরু হয় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র–শ্রমিক জনতার ব্যানারে একদল কর্মী মিছিল নিয়ে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে গেলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর তাঁদের সঙ্গে জাপা কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে জাপা কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার একপর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুজন নেতা তাঁদের ফেসবুক পেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মিছিল নিয়ে সেখানে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তবে জাপা কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষেরই দাবি, তারা আগে হামলার শিকার হয়ে প্রতিরোধ করেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে সভা–সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রার ওপর পুলিশের নিষেধাজ্ঞার কারণে জাতীয় পার্টি আজ তাদের সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি স্থগিত করে।
ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-শ্রমিক জনতার ব্যানারে দেওয়া পাল্টা কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়।