অনলাইন ডেস্ক : বহুল বিতর্কিত প্রজাপতি পরিবহনের এমডি রফিকুল ইসলাম প্রতারণার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ।
বুধবার (০৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর মিরপুর ১২ নম্বরের, ব্লক-বি, বাড়ি: ৭৯/বি এর প্রজাপতি পরিবহনের কার্যালয় থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। পরে রাতে তাকে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করা হয়। জানা যায় ঢাকা সিএমএম কোর্টের সিআর মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন এই রফিকুল ইসলাম।
পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রজাপতি পরিবহনের এমডি সিআর মামালার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। মামলাাটি কোর্টে হয়েছে। সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় হস্তান্তর করেছে। এর আগে প্রজাপ্রতির এমডি রফিকুলের বিরুদ্ধে প্রজাপ্রতি পরিবহনের বাস মালিকরা একাধিকবার বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছেন তার এই চাঁদাবাজির বিষয়ে। চাঁদাবাজি থেকে রেহায় পেতে অনেকেই বাস ছেড়েছেন প্রজাপ্রতি থেকেটয়লেট থেকে শুরু করে রাস্তায় প্রতি পদে পদে পরিবহন কোম্পানীর লাগামহীন চাঁদাবাজিতে বাস মালিকসহ চালক ড্রাইভাররা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি পরিবহন খাতে বেশুমার চাঁদাবাজি কিছুটা শিথিল হলেও এবার পরিবহন কোম্পানীর মালিকেরা লাগামহীন চাঁদাবাজিতে মত্ত হয়েছেন।
পরিবহন কোম্পানীর চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ইতিমধ্যেই অনেক বাস মালিক পরিবহন ব্যবসা থেকে সরে গেছেন, প্রজাপতি কোম্পানী ছেড়ে অন্য পরিবহন কোম্পানীতে গাড়ী নেবার কথা জানতে চাইলে বাস মালিকরা একেরপর এক বিভিন্ন ছুতোয় দেওয়া চাঁদাবাজির বর্ননা দেন।
কে এই রফিক: বরিশাল জেলার কাজিরহাট থানার আন্দার মানিক ইউনিয়নের ভাংগা ৮ নং ওয়ার্ডের সাবেক বিএনপির সভাপতি কুখ্যাত রাজাকার আবুল কাশেম খাঁনের ছেলে কে. এম. রফিক। মাত্র এক যুগ আগেও তাঁর বাবা ও ভাই খোকন খাঁনসহ রফিক লঞ্চে লঞ্চে যাত্রীদের কাছে রুটি ফেরী করে বিক্রি করতো। রফিক বিএনপির আমলে বরিশাল উত্তরের এক সময়ের ছাত্রদলের নেতা ছিলো।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ধূর্ত রফিক তোশামদ করে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কয়েকজন নেতার মন জয় করে নেয় এবং নিজেকে মিরপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি বলে পরিচয় দিতে থাকেন। এ নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করলে তিনি তার ফেসবুকে এ বিষয়ে উম্মুক্ত স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন বিএনপি করাটা অপরাধ ছিলনা, এখন আমি আওয়ামী নেতা। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি পরিচয় দিয়ে এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক এক প্রভাবশালী নেতার নাম ভাঙিয়ে কে, এম, রফিক কতিপয় দুর্নীতিবাজদের মাধ্যমে ঢাকা শহরের বিভিন্ন রুটের বিহঙ্গ ও প্রজাপতি নামক পরিবহন চলাচলের রুট পারমিশন নেন।
পরিবহনের রুট পারমিশন পাওয়ার পরেই রফিক বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরিবহনে বিরামহীন চাঁদাবাজি ও হেলপার সুপারভাইজার নিয়োগের নামে অসহায় মানুষদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে অল্পদিনেই রুটি বিক্রেতা রফিক বনে যান কোটিপতি! বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য পংকজ দেবনাথের নাম ভাংগিয়ে ঢাকায় ও বরিশালে শুরু করেন অবৈধ্য কেসিনো ও মাদক ব্যবসা। অবৈধ্য অস্ত্রধারীদের নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্য বিস্তার করতে চাইলে বিষটি সাংসদের নজরে আসে এবং মাননীয় সংসদ সদস্য রফিককে এলাকা থেকে বের করে দেন।
আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগে অনুপ্রবেশের আগে রফিক বিএনপির আমলে জয়নাল আবেদিন ফারুখের ঘনিষ্ঠ জন হিসেবে পরিচিত ছিলেন এ বিষয়ে এলাকার গন্যমান্য সবাই অবগত আছেন। কালো টাকার প্রভাবে কিছুদিন আগে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রফিক আওয়ামি লীগ থেকে নমিনেশন চান এবং তাহার কু-কর্মের কথা জেনে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ তাকে নমিনেশন দেয়নি। পরর্বতীতে সে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ এর বিপক্ষে সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন এবং বিপুল পরিমান কালো টাকা তাহার লালিত সন্ত্রাসী বাহিনীদের পিছনে খরচ করেন। কিন্তু অই এলাকার সমগ্র জনগন তাহার বিরুদ্ধে অবস্থান করে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা জনাব এ.কে.এম মাহফুজুল আলমের পক্ষে অবস্থান নিয়ে তাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেন।
উক্ত নির্বাচনে রফিক ৫ লক্ষ ভোটের মধ্য মাত্র তিন শত ভোটের কম পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে এলাকা ত্যাগ করেন। কিন্তু এলাকায় তাহার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীরা জুয়া,মাদক এবং ডাকাতির মতো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মাঝে মাঝে তাহার পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীদের মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা থানার পুলিশ ধাওয়া করলে তারা ঢাকায় চলে আসে এবং সে তাহার সন্ত্রাসী বাহিনীদের কে তার বিহঙ্গ ও প্রজাপতি নামক পরিবহনের বিভিন্ন রুটে সুপারভাইজার ও লাইন ম্যান হিসেবে পদায়ন দিয়ে পরিবহন চাঁদাবাজী করায় যা বিভিন্ন মিডিয়ায় ভাইরালও হয়।
আরও পড়ুন : কার্যকরী ৫ খাবার গ্যাস্ট্রিক রোধে