স্বল্প সুদে টাকা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন মীরপুর ১১ স্থানীয় অর্ধশতাধিক গ্রাহক। গ্রাহকদের কাছ থেকে নিয়ে বন্ধকের প্রায় ১ কেটি নগদ টাকা নিয়ে পালিয়েছেন মিরপুরের কথিত বিকাশ ব্যবসায়ী জুম্মন আলিউল সাব্বির । গত ২দিন ধরে চাদপুর টেলিকম সেন্টারের দোকানে তালা ঝুলতে দেখে প্রতারণার বিষয়টি টের পান ভুক্তভোগীরা।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর ওই ব্যবসায়ীকে না পেয়ে পল্লবী থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, জুম্মন আলিউল সাব্বির সহজ-সরল মানুষকে টার্গেট করে সুদের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় কোটি টাকা।
পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় আট -দশ বছর ধরে বিকাশের ব্যবসা করে আসছিলেন জুম্মন আলিউল সাব্বির। মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিপদগ্রস্ত মানুষকে নাম মাত্র টাকা দিতেন সাব্বির। নির্ধারিত সময়ে সুদসহ টাকা পরিশোধ করায় গ্রাহকের টাকা ফেরত দিয়ে মানুষের আস্থা অর্জন করেন সাব্বির।
এ জন্য সহজ-সরল মানুষকে টার্গেট করে বেশি বেশি লেনদেন করতে থাকেন তিনি। গত ১/০৭/২০২২ তারিখে সোয়েব আহম্মেদ সজলের কাছ থেকে প্রতারক সাব্বির প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা নেয়। ব্যাবসায়ে ২০% লভ্যাংশ দেওয়ার কথা কোন কিছু না দিয়ে উধাও হয়ে যান প্রতারক সাব্বির
পরবর্তীতে দোকান না খোলায় তাঁর খোঁজে এসে ভুক্তভোগীরা প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। সাব্বিরে গ্রামের বাড়িতে খোঁজ নিয়েও তাঁর সন্ধান পাননি ভুক্তভোগীরা। গতকাল পল্লবী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন সোয়েব আহম্মেদ সজলের নামের এক ভুক্তভোগী। ওই দিনই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত শুরু করে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তালাবদ্ধ থাকা সাব্বিরচাদপুর টেলিকম সেন্টারের সামনে ২০ থেকে ২৫ জন নারী-পুরুষের হট্টগোল। অনেকেই কান্না আর আহাজারি করছেন। প্রতিবেদকের উপস্থিতি টের পেয়ে এগিয়ে আসেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া প্রতারণার বিষয়টি প্রতিবেদককে জানান ভুক্তভোগীরা।
এ সময় সোয়েব আহম্মেদ সজলকে আহাজারি করতে দেখা যায়। এগিয়ে গিয়ে কথা হয় সজলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত ৪ মাস আগে জরুরি টাকার প্রয়োজনে সাব্বিরকে ৬৭ লক্ষ দেন সজল । ব্যাবসায়ে ২০% লভ্যাংশ দেওয়ার কথা কোন কিছু না দিয়ে উধাও হয়ে যান প্রতারক সাব্বির। কথামতো বাকি টাকা নিয়ে এসে দেখি দোকান বন্ধ। মোবাইলে ফোন করলেও তা বন্ধ পাই। এরপর দীর্ঘ সময় যাওয়ার পর দোকান না খোলায় প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারি।পারিবারিক চাপে এখন আমি প্রায় বাড়িছাড়া। প্রতিদিন সাব্বিরের দোকানের সামনে এসে বসে থাকি যদি সে আসে।সকলের পরামর্শে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। পুলিশ এসে তদন্ত করে গেছে।’
স্থানীয় এলাকার ভ্যানচালক মো. আজিত বলেন, দেড় ভরি স্বর্ণ বন্ধক রাইখা সাব্বিরকে ২লক্ষ টাহা দিছিলাম আমি ভ্যান চালাইয়া খাই। আমার সারা জীবনের কামাই দিয়াও আর জমাইতে পারুম না। আমি ওর বিচার চাই।’
এ বিষয়ে জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম বলেন,বিকশ বসায়ীর প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনা তদন্তে পুলিশ অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।