রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন। পড়াশোনার খরচ জোগাতে করেন রাজমিস্ত্রির কাজ। তবে সম্প্রতি ইমরানের পড়াশোনার খরচসহ সার্বিক দায়িত্ব নিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু।
তিনি বলেন, রাবির মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসনের পারিবারিক অসচ্ছলতার বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে নজরে আসে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনের। তাৎক্ষণিক রাসিক মেয়র তার ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটুকে মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে আব্দুল ওয়াহেদ খান টিটু বলেন, বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসুবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মহোদয় একটি পোস্ট দেখতে পান। এটি দেখার পর তিনি আমাকে ঐ শিক্ষার্থীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করার নির্দেশ প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন, তার পরিবার ও শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করি। পরে মেয়র মহোদয়কে অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থী ইমরান হোসেনের বিষয়ে অবগত করলে তিনি পড়াশোনার খরচ, থাকা-খাওয়াসহ তার সব ব্যয় বহন করবেন বলে জানান।
শিক্ষার্থী ইমরান হোসেন বলেন, রাসিক মেয়র স্যারের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। মেয়র স্যার আমার পড়াশোনাসহ সার্বিক দায়িত্ব নিবেন বলে জানিয়েছেন। রাজশাহীতে গিয়ে পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিলাম। মেয়র স্যার সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন, এতে আমি ও আমার পরিবার অনেক খুশি। আমরা মেয়র স্যারের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।
কুয়াকাটা বঙ্গবন্ধু মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, পারিবারিক অসচ্ছলতায় চাপা পড়ে নিষ্পেষিত ইমরান মেধার প্রমাণ দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়েছে। ভর্তি হওয়ার পর পড়াশোনার খরচ চালানো নিয়ে সে অনেক দুশ্চিন্তায় ছিল। পড়াশোনার খরচ জোগাতে রাজমিস্ত্রীর কাজও করছিল। মেধাবী ইমরানের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। মেয়রের এ মহতি কাজের সাধুবাদ জানাই। আমরা শিক্ষকরা ও এলাকাবাসী মেয়র মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমরা তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
উল্লেখ্য, ইমরান হোসেন পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুর রশিদ মাঝির ছেলে। আট সন্তানের মধ্যে পঞ্চম। ইমরান দারিদ্র ঠেকাতে পারেনি অদম্য মেধাবী ইমরান হোসেনের পথচলা। কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। আগামী ১ নভেম্বর থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তার ক্লাস শুরু হবে।