12.6 C
Los Angeles
শুক্রবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৩

নির্বাচনের মাঠে

চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর...

উন্নয়ন-অর্জন এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,...

নিপুণ রায়সহ ৫ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জে মামলা

রাজধানীর কেরানীগঞ্জে গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস ভাঙচুর...

পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে সংসদে যা বললেন রুমিন ফারহানা

জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, এই...

লিবিয়ায় জিম্মি করে ১৫ লাখ টাকা আদায়, মূলহোতার স্ত্রী গ্রেফতার

সারাদেশলিবিয়ায় জিম্মি করে ১৫ লাখ টাকা আদায়, মূলহোতার স্ত্রী গ্রেফতার
খবরটি শেয়ার করুন

ভালো বেতনে চাকরির আশ্বাস দিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতনের পর আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর ২নং কলোনির প্রবাসী ফজলু ব্যাপারীর বিরুদ্ধে।

তার খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সাহস পাচ্ছেন না কেউ। তবে সম্প্রতি তার ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা হলে ফজলুর বর্বরতার কাহিনী প্রকাশ্যে আসে।

জানা যায়, রাজবাড়ী সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের ইছাক মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে নানা প্রলোভনে বিদেশে নিয়ে জিম্মি করে তার পরিবারের কাছ থেকে কয়েক দফায় ১৫ লাখ টাকা আদায় করে নিয়েছেন দালাল চক্রের হোতা ফজলু। এ ঘটনায় ওই প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে মামলা হলে ফজলুর স্ত্রী কুলসুম ওরফে পোলো পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। তবে ওই নারীর জামিন না হলে ইছাককে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দিচ্ছে দালালচক্র। এমন ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে পরিবারটি।

নির্যাতনের শিকার ইছাক মিয়ার মা জোহরা বেগম বলেন, একই উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের আলাদিপুর ২নং কলোনির গ্রামের ফজলু ব্যাপারী লিবিয়াতে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার জন্য আমার ছেলে ইছাককে নানা প্রলোভন দেখায়। আমার ছেলে তার কথায় লিবিয়াতে যাওয়ার জন্য রাজি হয়। ফজলু ব্যাপারীও লিবিয়াতে থাকে। গত ১৫ মার্চ ফজলুর কথামতো তার স্ত্রী কুলসুম ও মেয়ে রিতা আমার বাড়িতে আসলে তাদের কাছে বিদেশ যাওয়া বাবদ ৪ লাখ টাকা তুলে দেই। গত ২১ মার্চ তারা আমার ছেলেকে লিবিয়াতে পাঠিয়ে দেন।

তিনি বলেন, লিবিয়া যাওয়ার এক মাস পরেই ফজলু তার সহযোগীদের সহায়তায় আমার ছেলে ইছাককে নির্যাতন করে ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে। এরপর সে মোবাইলে ইমোতে কল করে ৩ লাখ টাকা পাঠাতে বলে। তিনি ফজলুর স্ত্রী ও মেয়ের কাছে গত ৯ জুন ৩ লাখ টাকা দেন। এর কিছু দিন পর ইছাকের শরীরে নির্যাতনের দাগ দেখিয়ে তারা আবারো ৪ লাখ টাকা দাবি করে। না হলে তারা ইছাককে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। ফলে তিনি নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন উপায়ে টাকা সংগ্রহ করে ৪ লাখ টাকা প্রদান করেন। এত টাকা পাঠানোর পরেও তারা আমার ছেলেকে মুক্তি দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর ফজলু ইমোতে আরও ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা পাঠাতে বলেন। টাকা পাঠাতে মিস হলে ইছাককেও মিস করবেন বলে হুমকি দেওয়া হয়। ২১ সেপ্টেম্বর তার কথামতো ইসলামী ব্যাংক সোনাইমুড়ী নোয়াখালী শাখায় রেজাউল হক চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পাঠানো হয়। এছাড়া বিকাশের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে আরও টাকা পাঠানো হয়।

জোহরা বেগম বলেন, এভাবে আমার কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা আদায় করে দালালচক্র। এরপরও দালাল চক্র আমার ছেলেকে মুক্তি দেয়নি। সে এখন কোথায় আছে, কিভাবে আছে তাও জানি না। ফলে নিরুপায় হয়ে ১৪ নভেম্বর রাজবাড়ীর মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে ফজলু, কুলসুম ও রিতাকে আসামি করে মামলা করেন ইছাক মিয়ার স্ত্রী আমেনা বেগম।

তিনি আরও বলেন, ফজলু এভাবে বিভিন্নজনকে বিদেশে নিয়ে জিম্মি করে টাকা আদায় করেছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছেন না কেউ।

এদিকে স্বামীর ওপর নির্যাতনের খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ইছাকের স্ত্রী আমেনা বেগম। ছোট ছোট ৪ সন্তান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। অসুস্থতার জন্য প্রতিবেদকের সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলতে না পারলেও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন আমেনা বেগম।

ইছাক মিয়ার ছোটভাই ইউনুস মিয়া বলেন, আমার ভাবির দায়েরকৃত মামলায় গত ১৬ নভেম্বর ফজলুর স্ত্রী কুলসুম গ্রেফতার হলে ফজলু ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন সময়ে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। তার স্ত্রীকে যদি জামিন না করানো হয় তাহলে তারা আমার ভাইকে মেরে ফেলবে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছি।

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজবাড়ী থানার এসআই মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, মামলার এজাহারভুক্ত ২নং আসামি কুলসুম ওরফে পোলোকে (৩৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মূল আসামি বিদেশে থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রবাসী কল্যাণ শাখার সহকারী কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর আলম বাবু বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার যদি সমস্যার কথা উল্লেখ করে আমাদের কাছে লিখিতভাবে, ফোনে অথবা ইমেইলের মাধ্যমে অভিযোগ করেন আমরা সার্বক্ষণিক তার পাশে থাকব। প্রথমে আমরা নিজেরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। যদি না পারি সেক্ষেত্রে আমরা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে কথা বলে যেভাবে সহযোগিতা করার দরকার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা করব।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles

x