11.6 C
Los Angeles
শুক্রবার, ডিসেম্বর ৮, ২০২৩

নির্বাচনের মাঠে

চিকিৎসার জন্য সস্ত্রীক সিঙ্গাপুর গেলেন মির্জা আব্বাস

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর...

উন্নয়ন-অর্জন এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,...

নিপুণ রায়সহ ৫ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কেরানীগঞ্জে মামলা

রাজধানীর কেরানীগঞ্জে গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস ভাঙচুর...

পুলিশের কর্মকাণ্ড নিয়ে সংসদে যা বললেন রুমিন ফারহানা

জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, এই...

শিকলে বাঁধা মেহেনাজের জীবন

সারাদেশশিকলে বাঁধা মেহেনাজের জীবন
খবরটি শেয়ার করুন

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার কাচারিপাড়ার বাসিন্দা মেহেনাজ মিরা। বয়স মাত্র ২৫। এ বয়সে সবাই যখন স্বপ্ন গড়ার স্বপ্ন দেখতে ব্যস্ত। তখন কিনা তাকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় জীবন পার করতে হচ্ছে। মেহেনাজ টানা এক যুগ ধরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে এখন শিকলে বাঁধা।

পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রাথমিকে পড়া অবস্থায় হঠাৎই অসুস্থ হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন মেহেনাজ। পরিবারের সামর্থ না থাকায় আটকে আছে চিকিৎসা। আর চিকিৎসকরা বলছেন, সিজোফ্রেনিয়া নামে এই রোগের চিকিৎসা কেবল নির্দিষ্ট কয়েকটি হাসপাতালেই সম্ভব। মেহেনাজের প্রয়োজন একটু সহযোগিতা। যার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে চান আর দশটা নারীর মতো। শিকলে বাঁধা এ নারী উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত নুর মোস্তফার মেয়ে।

মেহেনাজের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি ভাঙা ঘরে তাকে শিকলে বেঁধে রেখেছে তার পরিবার। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মধ্যেই কারো উপস্থিতি ছাড়াই একাই কথা বলছেন তিনি। মাঝে মধ্যে হাসছেনও তিনি। ডান পায়ে দীর্ঘদিন ধরে শিকল বেঁধে রাখায় পচন ধরেছে পায়ে। এখন বাম পায়ে শিকল বেঁধে রাখা হয়েছে।

বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর দরিদ্র পরিবারের বড় ভাই আর ভাবিই তার একমাত্র ভরসা। প্রতিদিন খাওয়া গোসল সবই করাতে হয় বড় ভাই হাসানের। আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি তার। দু’বছর ধরে সব চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে অর্থ সংকটে।

নৈশপ্রহরী বড় ভাই হাসান বলেন, বাবা বেঁচে থাকা অবস্থায় পাবনা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কোনো লাভ হয়নি। আমি নৈশপ্রহরীর চাকরি করে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা বেতন পাই। আমার বড় ভাই চা বিক্রি করেন। আমাদের পক্ষে বোনের চিকিৎসা খরচ বহন করা প্রায় অসম্ভব। সমাজসেবা থেকে কিছু সহযোগিতা পেয়ে মেহেনাজকে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে। মাসের পর মাস তার পেছনে বাড়তি খরচ করতে হয়। কোনোভাবে যদি বোনটার সুচিকিৎসা করাতে পারতাম, আমরা খুবই উপকৃত হতাম।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন প্রশাখার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার কাজল বলেন, মেহেনাজের পরিবার অনেক দরিদ্র। দুই ভাই নিজেদের পরিবারের ভরণ-পোষণ করতেই হিমশিম খাচ্ছেন। এর উপর মেহনাজের জন্য প্রতিনিয়ত চিকিৎসার খরচ তাদের পক্ষে চালানো কঠিন। তাই সরকার ও সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসে, একটি স্থায়ী সুচিকিৎসা করানো সম্ভব। দীর্ঘমেয়াদি পরিচর্যা আর চিকিৎসায় মেহেনাজ সুস্থ হতে পারেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল হক মনির বলেন, আমরা এরই মধ্যে তার জন্য প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা করেছি। এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন সময় আর্থিক সহযোগিতা করা হয়। এছাড়া সরকারি যেকোনো সুযোগ-সুবিধা আসলে, আমরা তাদের পরিবারকে দেওয়ার চেষ্টা করি। তার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা প্রয়োজন। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে মেহেনাজের সুচিকিৎসা করানো সম্ভব।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাজীব সাহা বলেন, আমাদের হাসপাতাল থেকে সমাজসেবার মাধ্যমে তাকে বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা হয়। সিজোফ্রেনিয়া নামের এই রোগের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা একমাত্র মানসিক হাসপাতালেই সম্ভব। সুচিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে তার কিছুটা উন্নতি করা সম্ভব হবে। তবে দ্রুত চিকিৎসা করাতে পারলে উন্নতির হার বেশি।

Check out our other content

Check out other tags:

Most Popular Articles

x