Facebook
Twitter
WhatsApp

১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলো বাংলাদেশ ভুটানের বাজারে

১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলো বাংলাদেশ ভুটানের বাজারে
image_pdfimage_print

অর্থনীতি ডেস্ক : ভুটানের বাজারে তৈরি পোশাক, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী, কৃষিজাত পণ্য, প্রসাধনী সামগ্রী, শুঁটকি মাছ, কৃষিজাত পণ্য, চা, প্লাইউড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যসহ মোট একশটি পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলো বাংলাদেশ।

২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার পরেও বাংলাদেশ এ সুবিধা পাবে। রোববার (৬ ডিসেম্বর) ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) সই হয়। ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি একথা জানান।

এর আগে দ্বিপাক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি বা প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) সই করে বাংলাদেশ ও ভুটান।

নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তি সই করেন বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও ভুটানের অর্থ-বাণিজ্যমন্ত্রী লোকনাথ শর্মা। চুক্তি সই অনুষ্ঠানে গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভুটান প্রান্ত থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং সংযুক্ত ছিলেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প উন্নয়ন উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, বাণিজ্যসচিব ড. জাফর উদ্দিনসহ বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং ভুটান দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ভুটান ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দেয়। দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য এদিন ভুটানের সঙ্গে পিটিএ স্বাক্ষরিত হলো।

এর ফলে বাংলাদেশ ভুটানের বাজারে মোট একশটি পণ্যে এবং ভুটান বাংলাদেশে মোট ৩৪টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে। পরবর্তীসময়ে আলোচনার মাধ্যমে আরও পণ্য দু’দেশের তালিকায় সংযুক্ত করা হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। ফলে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বর্তমানে প্রাপ্ত বাংলাদেশের কিছু বাণিজ্য সুবিধা লোপ পাবে। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার ও নির্দেশনার ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব বাড়ানোর কার্যক্রম নিয়েছে।

‘এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকালমূলক বাণিজ্য চুক্তি সই হলো। এছাড়া পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তি সময়োপযোগী করা, পিটিএ ও এফটিএ সস্পাদন করা হবে। এ লক্ষ্যে বর্তমানে ১১টি দেশের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। ’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. মোমেন বলেন, বাংলাদেশকে স্বাধীনতার স্বীকৃতির পর থেকে সুদীর্ঘ ৫০ বছর দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের অধিক উন্নয়ন ঘটেছে। ‘বাংলাদেশ এবছর মুজিব শতবর্ষ এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে। আর এসময় বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি এক ঐতিহাসিক চুক্তিতে পরিণত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে দুই দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক উন্নয়নে নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হবে। ’

ভুটানে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া একশো পণ্য
বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত সুবিধা পাওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে- তৈরি পোশাক শিল্প, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যসামগ্রী যেমন জুস, কনডেন্সড মিল্ক, বিস্কিট, মিনারেল ওয়াটার, পাউরুটি, কৃষিজাত পণ্য যেমন আলু, প্রসাধনী সামগ্রী, টয়লেট্রিজ পণ্য যেমন সাবান ও শ্যাম্পু, শুঁটকি মাছ, সিমেন্ট, চা, প্লাইউড, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যসহ অন্যান্য পণ্য।

এছাড়া পুরুষদের জ্যাকেট, ব্লেজার, ট্রাউজার, আন্ডারওয়্যার, বাচ্চাদের পোশাক, চকলেট, বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য ও গুডস, চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য, গার্মেন্টস পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, অ্যালোমিনিয়াম ডোর, কাঠের তৈরি পণ্য, ইলেকট্রনিকস পণ্য, ফুটওয়্যার, ক্যাবলস, ঘড়ি, বেল্ট, মেটাল ও প্লাস্টিক ফার্নিচার ইত্যাদি।

আর ভুটান বোল্ডার, জিপসাম, ডোলোমাইট, ফল ও জুস, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য যেমন জ্যাম ও জেলি, মসলা, ফার্নিচারসহ অন্যান্য পণ্যে এ সুবিধা পেলো।

অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য। ডব্লিউটিও বিধি বিধান মেনে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক প্রিফারেন্টাল ট্রেড এগ্রিমেন্ট (পিটিএ) আলোচনা/ নেগোসিয়েশন অব্যাহত রেখেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২২-২৩ আগস্ট ২০১৯  ভুটানের সঙ্গে থিম্পুতে পিটিএ নেগোসিয়েশন কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। গত ১৬ জুন ২০২০ ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সভায় খসড়া পিটিএ চুক্তি ও এর সঙ্গে সংযুক্ত রুলস অব ডিটারমিনেশন অব ওরিজিন (আরও) নিজ নিজ দেশের অনুমোদনের পর স্বাক্ষরের জন্য চূড়ান্ত করা হয়। বিধি মোতাবেক চুক্তিটি স্বাক্ষরের পর ডব্লিটিওতে নোটিফাই করা হবে।

২০০৮-০৯ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে মোট বাণিজ্য ছিল ১২.৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ ০.৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে ও একই সময়ে আমদানি করে ১২.১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দু’দেশের বাণিজ্য ৫৭.৪৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়। এসময় বাংলাদেশ রপ্তানি করে ৭.৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য, একই সময়ে ভুটান থেকে আমদানি হয় ৪৯.৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

 

আরও পড়ুন : ঢাকার লড়াইয়ের পুঁজি মুশফিকের ব্যাটে

খবরটি শেয়ার করুন

Table of Contents

প্রধান উপদেষ্ঠা : আলহাজ্ব ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লাহ এমপি, সংসদ-সদস্য ঢাকা ১৬,প্রকাশক : মোঃ মাসুদ রানা (জিয়া) ।সম্পাদক : শাহাজাদা শামস ইবনে শফিক।সহকারী সম্পাদক : সৌরভ হাসান সোহাগ খাঁন। 

Subscribe Now

নিউজরুম চিফ এডিটর : মোঃ শরিফুল ইসলাম রবিন।সম্পাদকীয় কার্যালয় : ১২০/এ মতিঝিল বা/এ, ৪থ তলা, সুইট-৪০২, ঢাকা- ১০০০বার্তা কক্ষ : ০১৬৪২০৭৮১৬৪ – বিজ্ঞাপনের জন্য : ০১৬৮৬৫৭১৩৩৭

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by www.channelmuskan.tv © 2022

x