একটি বা দুইটি নয়, ১৫টি সন্তানের বাবা জেমস ম্যাকডগাল। কিন্তু সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার জন্য চুক্তিপত্রে সই করে অনুমতি নিতে হয় তাকে। কারণ, তিনি পেশায় একজন স্পার্ম ডোনার।
ব্রিটেনের বাসিন্দা তিনি। পেশাসূত্রে সমাজমাধ্যমে নিজের বিজ্ঞাপন দিতেন জেমস। যারা সন্তান নিতে চান, এই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমেই যোগাযোগ করেন জেমসের সঙ্গে। সন্তানদের জন্ম হওয়ার পর তাদের সঙ্গে দেখাও করতে চাইতেন জেমস। তবে সন্তানের পরিবারের তরফে জেমসের বিরুদ্ধে এই নিয়ে অভিযোগ উঠতে থাকে।
তাদের দাবি, চুক্তিপত্রে লেখাই রয়েছে, শুক্রাণুদান করার পর তিনি ব্যক্তিগত ভাবে সন্তানদের সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ রাখবেন না। এই নিয়ে আদালতে পাল্টা মামলাও করেন জেমস। তবে মামলা করার পর জেমস নিজেই নিজের বিপদ ডেকে আনেন। পুরনো নথিপত্র থেকে জানা যায়, ‘ফ্র্যাজাইল এক্স সিন্ড্রোম’ নামের এক জিনগত সমস্যায় ভুগছেন জেমস। এই সমস্যার কোনো নিরাময় নেই।
কিন্তু এর প্রভাব পড়েছে তার সন্তানদের উপর। জেমসের জিনগত এই সমস্যা থাকায় কম বুদ্ধিসম্পন্ন সন্তানের জন্ম হয়েছে। ১৫ সন্তানের সবাইর মধ্যেই এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা গিয়েছে। কোনো নতুন জিনিস শিখতে সাধারণের তুলনায় অনেক বেশি সময় লাগে তাদের। এই কথাটি প্রকাশ্যে আসার পর জেমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তার এই সমস্যার কথা সবার কাছে লুকিয়েছেন তিনি। সবাইকে ঠকিয়েছেন জেমস।
জেমসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এক নারীও। সারা (নাম পরিবর্তিত) জানান, জেমসের স্পার্ম ব্যবহার করেই তার দুই সন্তানের জন্ম। তিনি এবং তার সমকামী সঙ্গী দুই জনেই মা হওয়ার জন্য আগ্রহী ছিলেন। তাই বিজ্ঞাপন দেখার পর জেমসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সারা। সন্তান জন্মের পর বার বার সারাকে বিরক্ত করতে থাকেন জেমস। সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে চাইতেন জেমস। সারা কোনো উত্তর না দিলে তার সঙ্গীকেও ফোন করে বিরক্ত করতেন জেমস। সারার অভিযোগ, জেমস এক দিনে টানা ৭৭ বার ফোন করেছিলেন সারার সঙ্গীকে।
এই মামলার বিচারপতি লিয়েভান বলেন, জেমসের প্রচণ্ড জেদ। একবার যা চাই বলে ঠিক করেন, তা পাওয়ার জন্য যা খুশি তাই করতে পারেন। লিয়েভান আরো জানান, চুক্তিপত্র এতো কঠিন আইনি শব্দে লেখা হয়েছে যে, তা পড়ে কোনো সাধারণ মানুষ বুঝতে পারবেন না। তাই জেমসের সঙ্গে সন্তানদের দেখা করার অনুমতি পাওয়া যাবে না, তা চুক্তিপত্র পড়ে বোঝা কষ্টসাধ্য। এই ঘটনার পর বিচারপতি নির্দেশ দেন, সারার সঙ্গে জেমস কোনো রকম যোগাযোগ রাখতে পারবেন না। এমনকি, তিনি ‘স্পার্ম ডোনার’ হিসেবে কোনো বিজ্ঞাপনও দিতে পারবেন না।
স্পার্ম ডোনারদের নিয়ে বহু সিনেমা বানানো হয়েছে। ‘ভিকি ডোনার’ হিন্দি ছবিটি সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন আয়ুষ্মান খুরানা এবং ইয়ামি গৌতম। তবে, এই ছবিতে ‘ভিকি’কে এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়নি।
