কুমিল্লা থেকে নানির সঙ্গে ট্রেনে চট্টগ্রামে আসার সময় অপহরণ হয় তিন বছরের শিশু জেমি। এ ঘটনায় মামলা হলে তদন্তে নামে পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার ৬০ দিন পর শিশুটিকে উদ্ধার ও অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের ইপিজেড থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নগর পুলিশের ডিসি (বন্দর) শাকিলা সুলতানা।
এর আগে, মঙ্গলবার মীরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ থানার বারৈয়ারহাট এলাকা থেকে অপহরণকারী মো. জয়নাল আবেদীন ওরফে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার সুমন ফেনীর ধলিয়া ইউনিয়নের আব্দুল মজিদ মুন্সি বাড়ির নুরুল আমিনের ছেলে।
ডিসি শাকিলা সুলতানা জানান, মামলার পর শিশু জেমিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে বন্দর থানা পুলিশ। ঘটনাস্থলসহ রেলস্টেশন, বাস স্টপেজ ও সম্ভাব্য স্থানে সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়। একই সঙ্গে অপহরণকারীকে শনাক্তের পাশাপাশি কয়েক দফা কুমিল্লার লাকসাম, চৌদ্দগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে চালানো হয় অভিযান। একপর্যায়ে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার জোরারগঞ্জ থানার বারৈয়ারহাট এলাকা থেকে অপহরণকারী সুমনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যে ফেনী সদরের একটি বাসা থেকে অপহৃত শিশু জেমিকে উদ্ধার করা হয়।
ডিসি আরো জানান, শিশু জেমিকে নিজের শ্যালিকার মেয়ে পরিচয় দিয়ে ১২ বছর ধরে নিঃসন্তান ফেনীর আমেনা আক্তার ওরফে খালেদার কাছে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে দত্তক দেন সুমন। গ্রেফতারের পর তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আদালতের মাধ্যমে শিশুটিকে অভিভাবকের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।
২২ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে লাকসাম থেকে ট্রেনে চট্টগ্রামে আসার পথে অপহরণকারীর সঙ্গে শিশু জেমির নানির পরিচয় হয়। অল্প আলাপে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠতা। ট্রেনে জেমি কান্না করতে থাকলে কোলে নেন অপহরণকারী সুমন। আরেক মেয়ে পোশাককর্মী বন্দর থানার কলসিদিঘীর পাড় এলাকার বাসায় যাচ্ছিলেন জেমির নানি। কৌশলে বিষয়টি জেনে নেন সুমন। এরপর তিনিও সেদিকে যাচ্ছেন জানিয়ে বিশ্বস্ততা অর্জন করেন।
দুপুর আড়াইটার দিকে ট্রেন থেকে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে নামেন তারা। এরপর বাসে চড়ে চলে যান ইপিজেড এলাকায়। তখনও সুমনের কোলে ছিল জেমি। বাস থেকে নেমে রাস্তা পার হয়ে কলসিদিঘী রোডে ঢুকে সামনের দিকে হাঁটছিলেন জেমির নানি। তখনই সুমন জেমিকে নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে এ ঘটনায় বন্দর থানায় মামলা করেন জেমির বাবা।