বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক প্রতিস্থাপনে কাজ করছে, যা পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে স্থবির হয়ে পড়েছিল। দুই দেশের সম্পর্ক উন্নতিতে বাংলাদেশের অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের মধ্যে বৈঠক হতে পারে। চলতি মাসের শেষ দিকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে তাদের মধ্যে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে বলা হয়, বাংলাদেশ-পাকিস্তানের সম্পর্ক উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত কয়েকটি গতকাল রবিবার তাদের জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে কয়েক মাসের ব্যাপক বিক্ষোভের পর গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার বিষয়টি অবশ্যই ইসলামাবাদের জন্য ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক সংশোধনের ‘দরজা’ উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশি কোনো সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করা পাকিস্তানি কূটনীতিকদের জন্য অনেক কঠিন কাজ ছিল। তবে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠনের পর গত কয়েক সপ্তাহে পাকিস্তানি কূটনীতিক এবং অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশর অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের ইতোমধ্যে টেলিফোনে আলাপ হয়েছে। যোগাযোগের ধারাবাহিকতা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করার আশা দেখাচ্ছে।
পাকিস্তানি এ সংবাদমাধ্যমটি আরও দাবি করেছে, ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকটিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা। দুই দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়া আছে। যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন বাণিজ্য ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার জন্য দুই দেশের মধ্যে শীর্ষ ফোরামও আছে।
তবে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে কমিশন কার্যত অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল ২০০৭ সালে। তবে পাকিস্তান এখন যৌথ অর্থনৈতিক কমিশন পুনরুজ্জীবিত করতে চাইছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ করেছেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলছে, পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ গত ১০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। বৈঠকে পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত দুই দেশে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশে পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা সহজ করার দাবি জানান। পাকিস্তানও দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালু করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে পাকিস্তানি হাইকমিশনার বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় প্রক্রিয়া যেমন— পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের পরামর্শ এবং যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।