২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের বিজি-১৪৭ উড্ডয়নের পর ম্যাডাম ফুলিখ্যাত অভিনেত্রী সিমলার স্বামী পলাশ আহমেদ বোমাসদৃশ বস্তু ও অস্ত্র দেখিয়ে বিমানটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিলেন। পরে বিমানটি চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানের ‘ইমার্জেন্সি ডোর’ দিয়ে যাত্রী ও কেবিন ক্রুদের দ্রুত বের করা হয়। সেই সময় বিমান ছিনতাইকারী পলাশ ঢালিউড অভিনেত্রী সিমলার সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে কমান্ডো অভিযানে থাকা বিমানবাহিনীর এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। পরে আট মিনিটের এক কমান্ডো অভিযানে পলাশ আহমেদ নিহত হন। সেই সময় বিমান থেকে একটি খেলনা পিস্তল ও কিছু বিস্ফোরকসদৃশ বস্তু আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই ঘটনা নিয়ে আবার কথা বলতে দেখা যায় ম্যাডাম ফুলিখ্যাত এ অভিনেত্রীকে। সেই ঘটনা নিয়ে কিছুটা আক্ষেপই শোনা যায় সিমলার কণ্ঠে। অভিনেত্রী বলেন, পৃথিবীতে ভালোবাসার জন্য এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা বলতে পারি না, তবে আমি বিষয়টি নিয়ে গর্ব করছি না। কারণ এটি আমার জন্য কষ্টের।
সিমলা বলেন, আমি চাই না কখনো আমার জন্য কেউ এসব করুক। বেঁচে থাকতে আর কখনো এমন ঘটনার মুখোমুখি হতে চাই না। আমাকে ভালোবাসলে একটা ফুলই যথেষ্ট।
বয়স চল্লিশের গণ্ডি পেরোলেও এখনো সিনেমায় ফিরতে চান সিমলা। জানালেন যে কোনো চরিত্র পেলেই অভিনয় করবেন তিনি। সেটি নায়িকা হোক কিংবা পার্শ্বচরিত্র— আপত্তি নেই তার।
পুলিশের তদন্ত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩ মার্চ সিমলার সঙ্গে পলাশের বিয়ে হয়। পলাশ আগের বিয়ের খবর গোপন করায় ওই বছরের ৬ নভেম্বর সিমলা তাকে ডিভোর্স দেন। ডিভোর্সের পরেই ‘হতাশা’ থেকে বিমান ‘ছিনতাইয়ের’ চেষ্টা করেন পলাশ।
এ ঘটনায় অভিনেত্রী সিমলাকে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে অভিনেত্রী জানান, বিয়ের পর মনে হয়েছিল পলাশের মানসিক সমস্যা আছে। তাই ডিভোর্স দিই। তবে কেন বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করতে গেছেন, সেটি বলতে পারছি না।
সে সময়ে বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনা টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছিল। উড়োজাহাজ ‘ময়ূরপঙ্খী’ ছিনতাইচেষ্টা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন তদন্ত শেষে আদালতে জমা দেয় পুলিশ। তদন্তে ৭৯ জনের সাক্ষ্য ও বিভিন্ন আলামত পরীক্ষার পর জানা গেছে, সাবেক স্ত্রী চিত্রনায়িকা শামসুন নাহার সিমলা ডিভোর্স দেওয়ার পরই হতাশা থেকে বিমান ‘ছিনতাইয়ের’ নাটক করেন পলাশ।