বেসরকারি সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও পারটেক্স স্টার গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান আজিজ আল কায়সার টিটোর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন স্ত্রী তাবাসসুম কায়সার ওরফে ময়না।
এতে জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে হয়রানি করাসহ বিশেষ কিছু উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিবাদীপক্ষ। বিবাদীর পরিবারের পক্ষ থেকে মিডিয়াকে বলা হয়েছে, এর পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র কাজ করছে।
আদালত প্রতিবেদক জানান, বাদী ময়নার পক্ষে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মোট চারটি মামলার আবেদন করা হয়। আদালত একটি মামলা আমলে নিয়ে আজিজ আল কায়সারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। অপর ৩টি আবেদন তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় রেকর্ড করে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আজিজ আল কায়সার বর্তমানে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছেন।
হাসেম পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মূলত আজিজ আল কায়সারকে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরাতে কিছু বানোয়াট অভিযোগ প্রস্তুত করে হয়রানিমূলক মামলার ফাঁদ পাতা হয়েছে। সাজানো মামলার নেপথ্যে আছেন একজন প্রভাবশালী সংসদ-সদস্য। যিনি দীর্ঘদিন ধরে সিটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে নাম লেখাতে মরিয়া। অসদুদ্দেশ্যে তিনি এখন এই পন্থা বেছে নিয়েছেন। আজিজ আল কায়সার টিটোর স্ত্রী ময়না সিটি ব্যাংকের পরিচালক পদে থাকায় তাকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, কয়েক মাস ধরে ময়নার সঙ্গে আজিজ আল কায়সারের দাম্পত্য কলহ চলছে। তবে নিতান্ত ব্যক্তিগত বিষয়টি এতদিন গোপন থাকলেও মামলার মধ্য দিয়ে ঘটনা প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। বিশেষ করে অর্জুন রিচি নামে ভারতীয় এক যুবকের সঙ্গে ময়নার ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ চরম আকার ধারণ করে। একপর্যায়ে আজিজ আল কায়সার পুলিশের দ্বারস্থ হন। লিখিত অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেয়ে অর্জুন রিচিকে সিআইডি কার্যালয়ে তলব করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ময়নার সঙ্গে প্রতিদিন অনলাইনে ৫/৬ ঘণ্টা চ্যাটিংয়ের কথা স্বীকার করেন। পুলিশি জেরার মুখে ভারতে ফিরে যান অর্জুন রিচি। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, প্রচণ্ড ভালোবাসা থেকে স্ত্রীকে কোম্পানির মালিকানায় নিয়ে আসেন আজিজ আল কায়সার। সিটি ব্যাংক ছাড়াও গ্রুপের কয়েকটি কোম্পানিতে পরিচালক পদে আছেন ময়না। এছাড়া স্ত্রীকে নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন আজিজ আল কায়সার। কিনে দিয়েছেন শতকোটি টাকার অলংকার। দীর্ঘ ২৮ বছরের সংসার তাদের।
এদিকে মামলা দায়েরের পর নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে ২৮ ডিসেম্বর গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ময়না। এতে অভিযোগ করা হয়, বাসায় ঢুকে সাংবাদিক পরিচয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও র্যাবের লোক পরিচয়ে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়া স্বামী আজিজ আল কায়সারের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেন তিনি। গুলশান থানার ওসি বিএম ফরমান আলী বলেন, ‘বাদীর অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। ঘটনার সত্যতা পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’