রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এ ধরনের আচরণ রোধে কেন একটি আচরণবিধি তৈরি করা হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা আগামী ৩০ দিনের মধ্যে লিখিত আকারে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
এর আগে, গতকাল (২৯ সেপ্টেম্বর) মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব এবং মোহাম্মদ কাউছার এ রিট দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর কর্তৃক ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে তাদেরকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। যা শুধু বেআইনি নয়; শিক্ষার্থীদের প্রতি চরম অবমাননাকর।
এতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর নিজ হাতে কাঁচি দিয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় একজন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। ভাগ্যক্রমে তিনি এখনও বেঁচে আছেন। তিনি এখন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে রয়েছেন।
একজন নাগরিককে তার চুলকেটে দেওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক, বেআইনি এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী বলে রিটে উল্লেখ করা হয়।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস সংস্কৃতি ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ১৪ জন শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় গত সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র নাজমুল হোসেন তুহিন (২৫) ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এদিকে এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন ২৮ সেপ্টেম্বর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা তিনটি পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এদিকে এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে রাতেই রবি ক্যাম্পাসে ছুটে এসে বিক্ষোভ করেন। গভীর রাত পর্যন্ত তাদের এ বিক্ষোভ চলে। পরে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে তারা আবারও বিক্ষোভ শুরু করলে রবি ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে।