ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের বিরুদ্ধে করা দুটি মানহানীর মামলা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে সাকরাইন উৎসব উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার ডিএসসিসি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তাপস।
এ সময় ব্যারিস্টার তাপস আরো বলেন, ‘সাবেক মেয়র আমাকে ব্যক্তিগতভাবে তাঁর আক্রোশের বশবর্তী হয়ে যে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা মানহানিকর হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পর্যালোচনা করছি। ভবিষ্যতে প্রয়োজন বোধ করলে মামলা হতে পারে।’
মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে মানহানির বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে গতকাল সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালতে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের নামে দুটি মামলা করা হয়। একটি মামলার বাদীর নাম কাজী আনিসুর রহমান। অপর মামলাটির বাদী অ্যাডভোকেট মো. সারওয়ার আলম। মামলা দুটির ব্যাপারে আদেশের জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন রেখেছেন আদালত।
এর আগে গত ৯ জানুয়ারি শনিবার রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকায় কদম ফোয়ারার সামনে ডিএসসিসি কর্তৃক উচ্ছেদের প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে সাঈদ খোকন বলেছিলেন, ‘তাপস মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলেছেন। আমি তাঁকে বলব, রাঘব বোয়ালের মুখে চুনোপুটির গল্প মানায় না। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত করুন, তারপর চুনোপুটির দিকে দৃষ্টি দিন।’
এ সময় সাবেক মেয়র অভিযোগ করে আরো বলেন, তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তাঁর নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তরিত করেছেন এবং এই শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং করছেন। অপরদিকে, অর্থের অভাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না, সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯, ২য় ভাগের ২য় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯ (২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
গতকাল সোমবার সাঈদ খোকনের বক্তব্যকে মানহানিকর উল্লেখ করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন তাপস।
ডিএসসিসি মেয়র বলেছিলেন, ‘যাদের সঙ্গে টাকা লেনদেন হয়েছে… যারা টাকা লেনদেন করেছে, তারাই অভিযোগ দিয়েছে। আমরা ঢাকা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে অথবা আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনো সময় কোনো অভিযোগ আনিনি। সেখানে যারা লেনদেন করেছে, যারা ব্যবসায়ী-দোকানদার হিসেবে অবৈধভাবে সেই জায়গাগুলোর দখলে ছিলেন, তাঁরা অর্থ লেনদেন করেছেন। সুতরাং এখন তিনি (সাঈদ খোকন) পুরো দোষ আমার ওপর চাপানোর চেষ্টা করছেন। সেটা অনভিপ্রেত বলে আমি মনে করি। সেটা শুধু আক্রোশের বশবর্তী হয়ে করা হয়েছে।’
তাপস আরো বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের ফলে অবশ্যই মানহানি হয়েছে এবং আমি এ ব্যাপারে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তাপস বলেছিলেন, ‘মানহানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা মানেই আইনি ব্যবস্থা।’
আরও পড়ুন : সাক্ষ্য দিলেন আদালতে দিহানের বাসার দারোয়ান